উৎপল মণ্ডল,শ্যামনগর পৌর প্রতিনিধিঃ
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে যমুনা নদী খননকালে এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে চন্ডিপুর মহাশ্মশানের লাশ স্নানের বেদি ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের পক্ষে নিয়োগকৃত তদারককারি দোলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শ্যামনগরের চন্ডিপুর মহাশ্মশানে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে চন্ডিপুর মহাশ্মশানে লাশ স্নানের বেদি ভাঙচুরের প্রতিবাদে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতিবাদের মুখে বন্ধ হয়ে গেছে নদী খনন কাজ।
শ্যামনগর উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের সুকুমার হালদার জানান, শতাধিক বছর আগে থেকে চন্ডিপুর গ্রামের রামচরণ মন্ডলের জমিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের শবদেহ সৎকার করা হতো। বর্তমানর মাঠ জরিপে সাত শতাংশ জমি মহাশ্মশানের নামে রেকর্ড হয়েছে।
পরিতোষ মন্ডল বলেন, এরা মাপ জরিপ না করেই আমাদের রেকর্ডিয় মহাশ্মশান ইচ্ছা করেই ভেঙে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, তারা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কিছু মানুষের যাদের খাস জায়গার উপর ঘর আছে তাদের ঘর, জায়গা বাঁচানোর জন্য আমাদের এই মহাশ্মশান ভেঙেছে।
সুনিল আমিন বলেন, এখনো এই জায়গা মাপা হয়নি। এরা না মেপে কেন কাটছে বুঝলাম না।
চন্ডিপুর গ্রামের ধর্মদাস গাইন ও সুকুমার মন্ডল জানান, যমুনা নদী খনন প্রকল্পের আওতায় গত বছরের ২৭ অক্টোবর থেকে কালিগঞ্জ থেকে শ্যামনগর পর্যন্ত নদী খননের কাজ শুরু হয়। আগামি ৩০ মে এর মধ্যে এ কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। ঠিকাদার ইউনুস আলী নদী খননের কাজ দেখভালের জন্য স্থানীয়ভাবে দেলোয়ার হোসেনকে দায়িত্ব দিয়েছেন। যদিও অভিযোগ রয়েছে পুরাতন ম্যাপ অনুযায়ি ২৫০ থেকে ৩০০ ফুট চওড়া আদি যমুনা বর্তমানে ৮০ থেকে ১০০ ফুট চওড়া করে খনন করা হচ্ছে। যাকে খাল ছাড়া নদী বলা যাবে না। দু’পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করেই চলছে খনন কাজ।
তারা আরো জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে চন্ডিপুর এলাকায় নদী খননের সময় মহাশ্মশানের লাশ স্নান বেদি ভেঙে দেন তদারককারি দোলায়ার হোসেন। খবর পেয়ে এলাকাবাসীর প্রতিবাদের একপর্যায়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দেওয়ার লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এ ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন।
এ ব্যপারে ঠিকাদারের যমুনা খননের তদারককারি দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সাতক্ষীরার পানি উন্নয়ন বোর্ড -২ এর কালিগঞ্জ শাখার সেকশান অফিসার তন্ময় হালদারের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তাকে বার বার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
তবে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড -২ এর দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারি প্রকৌশলী (এসডি) শেখ আল মুনসুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।
Leave a Reply